Why did Nathuram Godse kill Gandhiji?

 "নাথুরাম গডসে কেন গান্ধীজিকে হত্যা করেছিলেন"

Why did Nathuram Godse kill Gandhiji?

  1. ভূমিকা – ভারত ভাগ, স্বাধীনতা, ও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট 
  2. নাথুরাম গডসের শৈশব ও চিন্তাধারা  
  3. গান্ধীজির রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শ  
  4. হিন্দু মহাসভা ও গডসের রাজনৈতিক কার্যকলাপ  
  5. গান্ধীজি ও মুসলিমদের প্রতি আচরণ নিয়ে গডসের মত  
  6. পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত  
  7. গডসের মনস্তত্ত্ব ও হত্যার পরিকল্পনা  
  8. ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮: হত্যার দিন  
  9. আদালতের বিচার ও গডসের বক্তব্য (বিখ্যাত জবানবন্দি)  
  10. গডসের ফাঁসি ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়া  
  11. সমসাময়িক রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান  
  12. জনমত ও ইতিহাসের ব্যাখ্যা – ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ  
  13. নাথুরাম বনাম গান্ধী – আদর্শিক দ্বন্দ্ব  
  14. সাম্প্রতিক সময়ে গডসেকে নিয়ে বিতর্ক ও চর্চা  
  15. উপসংহার: হত্যা ন্যায়সঙ্গত ছিল কি না – বিচার বিশ্লেষণ


------------------------------------------------------------


📘 অধ্যায় ১: ভূমিকা – স্বাধীনতা, বিভাজন ও উত্তাল ভারত

১.১ স্বাধীনতার প্রাক্কালে ভারতের অবস্থা  

১৯৪৭ সাল। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ব্রিটিশ উপনিবেশের শাসনে থাকা ভারত তখন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু এই স্বাধীনতা আসছে এক ভয়াবহ মূল্য চুকিয়ে—দেশভাগ। ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি দেশ সৃষ্টি হচ্ছে। কোটি কোটি মানুষ বাধ্য হচ্ছে ধর্মের ভিত্তিতে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে। হিন্দু, মুসলিম, শিখ—সকলের মধ্যে দাঙ্গা, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটের ভয়াল বিভীষিকা ছড়িয়ে পড়ছে।


১.২ গান্ধীজির অবস্থান  

এই সময় মহাত্মা গান্ধী ছিলেন ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও নৈতিক নেতা। তিনি আজীবন অহিংসা, হিন্দু-মুসলিম ঐক্য এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে কথা বলে গেছেন। কিন্তু দেশভাগের সময় তিনি ব্যথিত ছিলেন। তিনি পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করলেও বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিয়েছিলেন এবং চেয়েছিলেন যেন উভয় দেশ শান্তিতে থাকে।


১.৩ পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি টাকা দেওয়া – বিতর্কের সূচনা  

দেশভাগের সময় চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকার পাকিস্তানকে ৭৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল, যার মধ্যে ২০ কোটি আগেই দেওয়া হয়। বাকী ৫৫ কোটি টাকা তখন নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক কারণে আটকে রাখা হয়। কিন্তু গান্ধীজি অনশন শুরু করেন, কারণ তিনি মনে করতেন চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানকে অর্থ দেওয়া উচিত। তাঁর এই অবস্থান অনেকের চোখে বিতর্কিত হয়ে দাঁড়ায়।


১.৪ রাজনৈতিক পরিবেশ: সংঘর্ষ ও মতপার্থক্য

এই সময় হিন্দু মহাসভা, আরএসএস ও অন্যান্য হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলগুলি গান্ধীজির অবস্থানে ক্ষুব্ধ ছিল। তাঁদের মতে, গান্ধীজির নীতিগুলি হিন্দুদের স্বার্থের বিরোধী এবং মুসলমানদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। এই বিরোধ ক্রমশ রূপ নেয় রাজনৈতিক ও আদর্শিক সংঘর্ষে।


১.৫ নাথুরাম গডসের আবির্ভাব  

এই উত্তাল সময়ে এক যুবক—নাথুরাম বিনায়ক গডসে—ধীরে ধীরে উঠে আসছেন ইতিহাসের মঞ্চে। তিনি ছিলেন হিন্দু মহাসভার সদস্য ও আরএসএস-এর প্রাক্তন কর্মী। গান্ধীজির নীতির বিরুদ্ধে তাঁর মনে তীব্র ক্ষোভ জন্মে, যা পরে গড়ায় চূড়ান্ত সহিংস সিদ্ধান্তে।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ২: নাথুরাম গডসের শৈশব ও চিন্তাধারা

২.১ জন্ম ও পরিবার  

নাথুরাম বিনায়ক গডসে জন্মগ্রহণ করেন ১৯১০ সালের ১৯ মে, মহারাষ্ট্রের পুনে জেলার বরসী গ্রামে। তাঁর পরিবার ছিল একটি সাধারণ, ব্রাহ্মণ পরিবার। পিতা বিনায়করাও ছিলেন পোস্ট অফিসের কর্মচারী।


২.২ নামকরণ ও বিশ্বাস  

আদিতে তাঁর নাম ছিল “রামচন্দ্র।” ছোটবেলায় তাঁকে নাথুরাম নাম দেওয়া হয় একটি পৌরাণিক বিশ্বাস থেকে: তাঁর আগের কয়েকটি ভাই অল্প বয়সে মারা গিয়েছিল বলে, পরিবারে তাঁকে মেয়ে সাজিয়ে বড় করা হয়, যাতে “অশুভ শক্তি” তাকে চিনতে না পারে। এ থেকেই আসে তাঁর নাম “নাথু-রাম” (নাকের নথ পরে বেড়াতেন)।


২.৩ শিক্ষাজীবন  

গডসে মাধ্যমিক স্কুলে পড়েন, কিন্তু উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করেননি। তবে তিনি অত্যন্ত পড়ুয়া প্রকৃতির ছিলেন। তরুণ বয়সেই তিনি ইতিহাস, ধর্ম, রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করতে শুরু করেন।


২.৪ রাজনীতির প্রতি ঝোঁক  

তরুণ বয়স থেকেই গডসে হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি প্রভাবিত হন বিনায়ক দমোদর সাভারকার ও হিন্দু মহাসভার মতাদর্শ দ্বারা। এই সময়েই তিনি আরএসএস ও পরে হিন্দু মহাসভা-র সদস্যপদ গ্রহণ করেন।


২.৫ আদর্শ ও দর্শন  

গডসের আদর্শ ছিল—একটি হিন্দু রাষ্ট্র গঠন, যেখানে হিন্দু সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য হবে প্রাধান্যপ্রাপ্ত। তিনি মনে করতেন, গান্ধীজির অহিংসা ও হিন্দু-মুসলিম ঐক্য নীতিতে হিন্দু জাতি দুর্বল হয়ে পড়ছে।

------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৩: গান্ধীজির রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শ

৩.১ অহিংসা ও সত্যাগ্রহ  

মহাত্মা গান্ধীজির আদর্শ ছিল অহিংসা (Ahimsa) এবং সত্যাগ্রহ (Satyagraha)। তিনি বিশ্বাস করতেন, যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করাই সত্যিকারের শক্তির পরিচায়ক।


৩.২ হিন্দু-মুসলিম ঐক্য  

তিনি সর্বদা চেয়েছেন ভারতবর্ষে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান—সব ধর্মের মানুষ যেন মিলেমিশে থাকতে পারে। গান্ধীজি বারবার হিন্দুদের মুসলিমদের প্রতি সহনশীল হতে আহ্বান জানাতেন, যা গডসের মতো অনেকেই ভালোভাবে নেননি।


৩.৩ পাকিস্তান ও দেশভাগ  

গান্ধী দেশভাগ চাননি। তিনি চেয়েছিলেন হিন্দু-মুসলিমরা একত্রে ভারতেই বাস করুক। কিন্তু রাজনীতির বাস্তবতায় তিনি দেশভাগ মেনে নেন। দেশভাগের পরও পাকিস্তানের প্রাপ্য অর্থ (৫৫ কোটি রুপি) তারা যাতে পায়, তা নিশ্চিত করতে চান—যা গডসের মতে ছিল বিশ্বাসঘাতকতা।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৪: হিন্দু মহাসভা ও গডসের রাজনৈতিক কার্যকলাপ

৪.১ হিন্দু মহাসভায় প্রবেশ  

গডসে আরএসএস-এর প্রাথমিক সদস্য হলেও পরে তিনি হিন্দু মহাসভায় আরও সক্রিয় হন। এখানে তিনি লেখালেখি শুরু করেন এবং একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক হন—"Agrani" (পরে "Hindu Rashtra")।


৪.২ গান্ধীর সমালোচনায় লেখালেখি  

গডসে তাঁর পত্রিকায় বারবার গান্ধীজির নীতিকে আক্রমণ করতেন। তিনি গান্ধীজিকে ‘হিন্দু স্বার্থের বিরুদ্ধে’ কাজ করা নেতা হিসেবে উপস্থাপন করতেন।


৪.৩ দেশভাগের প্রতিক্রিয়া

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর গডসে প্রচণ্ডভাবে ক্ষুব্ধ হন। তাঁর মতে, এই দেশভাগের ফলে লাখ লাখ হিন্দু প্রাণ হারায়, গৃহহীন হয়—এবং এই অবস্থার জন্য গান্ধীও দায়ী।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৫: গান্ধীজি ও মুসলিমদের প্রতি আচরণ নিয়ে গডসের মত

৫.১ ধর্মনিরপেক্ষতা না পক্ষপাত?  

গডসের মতে, গান্ধীজি সব সময় মুসলিমদের প্রতি পক্ষপাত করতেন। তিনি হিন্দুদের নিজের অধিকার রক্ষার জন্য সংগঠিত হতে নিরুৎসাহিত করতেন, অথচ মুসলিমদের স্বাধীন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দাবিকে সমর্থন করতেন।


৫.২ কাইদে-আযম ও গান্ধী  

গডসে বিশ্বাস করতেন, গান্ধীজি জিন্নাহ ও মুসলিম লীগের দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে হিন্দুদের স্বার্থে আপস করেছেন। এর ফলে পাকিস্তান তৈরি হয় এবং হিন্দুদের উপর অত্যাচার বাড়ে।


৫.৩ গডসের মানসিক অসন্তোষ  

এই সময় গডসের মনে একটি বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়—গান্ধীজির আদর্শিক অবস্থান ভারতের বিভাজনের অন্যতম কারণ এবং তিনি “হিন্দু জাতির শত্রু”।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৬: পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত

৬.১ ইতিহাসের পটভূমি  

স্বাধীনতার পরে চুক্তি অনুযায়ী ভারত সরকার পাকিস্তানকে ৭৫ কোটি রুপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মধ্যে ২০ কোটি আগেই দেওয়া হয়। কিন্তু কাশ্মীর আক্রমণ ও সহিংসতার প্রেক্ষিতে বাকী ৫৫ কোটি টাকা ভারত সরকার আটকে দেয়।


৬.২ গান্ধীজির অনশন  

গান্ধীজি মনে করতেন, এটি একটি নৈতিক দায়বদ্ধতা। পাকিস্তানকে অর্থ না দিলে ভারতের বিশ্বসভার সামনে নৈতিক অবস্থান দুর্বল হবে। এজন্য তিনি অনশন শুরু করেন।


৬.৩ সরকার পিছু হটে

গান্ধীজির চাপ ও অনশনের পর সরকার পাকিস্তানকে অর্থ দিতে রাজি হয়। এই সিদ্ধান্তে অনেক হিন্দু জাতীয়তাবাদী, বিশেষ করে গডসে, চরমভাবে ক্ষুব্ধ হন।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৭: গডসের মনস্তত্ত্ব ও হত্যার পরিকল্পনা

৭.১ সিদ্ধান্তের পরিণতি  

৫৫ কোটি টাকা পাকিস্তানকে দেওয়ার পর গডসে মনে করেন, গান্ধী ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন, গান্ধীজিকে হত্যাই একমাত্র উপায়, যাতে হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়।


৭.২ হত্যার পরিকল্পনা  

গডসে তাঁর কয়েকজন সহযোগী—নরায়ণ আপটে, বিষ্ণু কারকরে, দিগম্বর রামচন্দ্র সহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা করেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮-এর সন্ধ্যায় গান্ধীজিকে হত্যা করা।


৭.৩ অস্ত্র সংগ্রহ  

গডসে ব্যবহার করেন একটি Beretta পিস্তল, যা তিনি পুণে থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। তিনি আগে একবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৮: গান্ধীজির হত্যা – ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮

৮.১ দিনটি শুরু হয় সাধারণভাবে  

৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮, শুক্রবার। দিল্লির বিরল্যা হাউসে সন্ধ্যা ৫টার সময় প্রতিদিনের মতো প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। গান্ধীজি হালকা অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু তবুও হাঁটতে হাঁটতে সভার দিকে যাচ্ছিলেন।


৮.২ হত্যার মুহূর্ত  

হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে থেকে গডসে সামনে আসে। গান্ধীজির সামনে দাঁড়িয়ে তিনটি গুলি চালায়। গুলিগুলি বুকে ও পেটে লাগে। গান্ধীজি মাটিতে পড়ে যান। শেষ কথা ছিল বলা হয়—"হে রাম!"


৮.৩ মৃত্যুর পর দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া  

গান্ধীজির মৃত্যুতে গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে যায়। শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি রাজ্যে দাঙ্গা, আরএসএস ও হিন্দু মহাসভার ওপর চড়াও হওয়া শুরু হয়।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ৯: বিচার ও আদালতের রায়

৯.১ গ্রেফতার ও অভিযোগ  

নাথুরাম গডসে ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হয়। মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়, যার মধ্যে ছিলেন নরায়ণ আপটে, বিষ্ণু কারকরে প্রমুখ।


৯.২ গডসের স্বীকারোক্তি  

আদালতে গডসে নিজেই দোষ স্বীকার করেন। তবে তাঁর যুক্তি ছিল, তিনি গান্ধীকে হত্যা করেছেন “দেশের স্বার্থে।” তিনি বলেন, “গান্ধী মুসলমানদের প্রতি পক্ষপাত করেছেন ও হিন্দুদের দুর্বল করেছেন।”


৯.৩ সাজা ও কার্যকর  

১৯৪৯ সালে রায় ঘোষণা হয়। গডসে ও আপটেকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর তাঁদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ১০: গান্ধী হত্যা– ভারতীয় রাজনীতিতে প্রভাব

১০.১ আরএসএস ও হিন্দু মহাসভার প্রভাব  

গান্ধীজির হত্যার পর আরএসএসকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। হিন্দু মহাসভার জনপ্রিয়তাও হ্রাস পায়। যদিও সরাসরি সংগঠনের সম্পৃক্ততা আদালতে প্রমাণ হয়নি।


১০.২ কংগ্রেসের নীতি দৃঢ় হয়  

কংগ্রেস দল গান্ধীজির মৃত্যুর পর আরও বেশি করে ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর জোর দেয়। দেশব্যাপী “জাতীয় ঐক্য” পুনঃস্থাপনে কাজ শুরু হয়।


১০.৩ জনমানসে গডসের চিত্র  

গডসে একদিকে নিন্দিত খুনি হিসেবে পরিগণিত হন, অপরদিকে কিছু উগ্র জাতীয়তাবাদীর কাছে তিনি “বলি” বা “হিন্দু রক্ষক” রূপে উপস্থাপিত হন—এই দ্বৈত চিত্র আজও বিদ্যমান।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ১১: গান্ধীজির দর্শন ও উত্তরাধিকার

১১.১ অহিংসা ও সত্যাগ্রহ  

গান্ধীজি বিশ্বাস করতেন, সত্য ও অহিংসা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। তাঁর আন্দোলনের কৌশল ছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস প্রতিরোধ, যা আজও বিশ্বজুড়ে অনুসরণযোগ্য মডেল।


১১.২ সামাজিক ন্যায় ও সমতা  

তিনি ছুঁয়োছুঁয়ি প্রথা, বর্ণবাদ, নারীর প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ‘হরিজন’ বা অস্পৃশ্যদের সমাজে সম্মান ফিরিয়ে দিতে তিনি বহু কর্মসূচি চালু করেন।


১১.৩ বিশ্বজনীন প্রভাব  

নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র সহ বহু নেতাই গান্ধীজির আদর্শ অনুসরণ করেছেন। তিনি কেবল ভারতের নন, বিশ্বের বিবেক হয়ে উঠেছিলেন।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ১২: গডসের শেষ চিঠি ও আত্মপক্ষ সমর্থন

১২.১ আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য  

গডসে আদালতে বলেন, তিনি গান্ধীকে ঘৃণা করতেন না, বরং শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু বিশ্বাস করতেন, তাঁর নীতিগুলি ভারতের ক্ষতি করছে।


১২.২ শেষ চিঠি  

ফাঁসির আগের চিঠিতে গডসে লেখেন— “আমি গান্ধীজিকে হত্যা করেছি আমার বিবেকের তাগিদে। আমি দেশের মঙ্গল চেয়েছি।” চিঠিটি আজও বিতর্কিত।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ১৩: আজকের ভারতে গান্ধী বনাম গডসে বিতর্ক

১৩.১ রাজনীতিতে পুনরায় গডসের আবির্ভাব  

বর্তমানে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন গডসের পক্ষে কথা বলে, তাঁকে ‘দেশভক্ত’ হিসেবে উপস্থাপন করে। আবার, বেশিরভাগ ভারতীয় এখনো গান্ধীজিকে "জাতির জনক" হিসেবে শ্রদ্ধা করে।


১৩.২ সোশ্যাল মিডিয়া ও মিম কালচার

সোশ্যাল মিডিয়ায় গডসে-সমর্থন বাড়ছে, যার ফলে গণতান্ত্রিক চেতনা ও ইতিহাস পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।


------------------------------------------------------------


📘 অধ্যায় ১৪: শিক্ষাগত ও নৈতিক বিশ্লেষণ

১৪.১ ইতিহাস শেখার প্রয়োজন  

গান্ধী ও গডসে উভয়ের ইতিহাস জানা জরুরি—শুধু তাদের কাজ নয়, কেন তারা তা করলেন সেটাও বোঝা দরকার।


১৪.২ নৈতিক প্রশ্ন  

একজন আদর্শবাদী রাজনীতিক আর একজন উগ্র জাতীয়তাবাদীর সংঘর্ষ কি শুধুই আদর্শগত? নাকি রাজনৈতিক ব্যবহার? শিক্ষায় এসব প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা হওয়া জরুরি।


------------------------------------------------------------

📘 অধ্যায় ১৫: উপসংহার – একটি হত্যার দায়ভার কার?

১৫.১ ব্যক্তির না সমাজের দায়?  

গান্ধীজির মৃত্যু এক ব্যক্তির হাতে ঘটলেও এর পিছনে ছিল গোটা সমাজের চাপ, সহিংসতা, দাঙ্গা ও বিশ্বাসঘাতকতা।


১৫.২ ইতিহাস কী শিক্ষা দেয়?  

এই ঘটনাটি শেখায়, ঘৃণা থেকে কখনোই জাতি গঠিত হয় না। অহিংসা, সহনশীলতা ও মানবিকতা—এই তিনটি চেতনাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।


------------------------------------------------------------


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.